বিটকয়েন কি?


 

বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন হলো একধরণের ক্রিপ্টোকারেন্সি যেখানে খুব সহজেই একে অন্যের সাথে একটি ওয়ালেট এপ (Wallet App) এর মাধ্যমে টান্সেকশান করা যায়। যখন কেউ এই ট্রান্সেকশান করবে তখন সেটি একটি পাবলিক লেজারে দেখা যাবে। এই পাবলিক লেজারকে বিটকয়েন নেটওয়ার্ক কন্ট্রোল বলে। ধরুন, সাব্বির নামের এক ব্যক্তি মাহিকে বিটকয়েন পাঠাতে চায়।এই ট্রান্সেকশানের সময় সাব্বির থেকে মাহির কাছে একটি ম্যাসেজ যায় যেই ম্যাসেজে একটি ইউনিক সিগনেচার থাকে যেটাকে এনক্রিপ্ট করে বিটকয়েন নেটওয়ার্কে পাঠানো হয়।বিটকয়েন একাউন্টে দুটি কি (Key) থাকে। এর মধ্যে একটি পাবলিক অপরটি প্রাইভেট কি। যখন সাব্বির ম্যাসেজ দিচ্ছে তখন এই দুটি কি (Key) ই ব্যবহার করা হয় যা পাবলিক লেজারে লিখা থাকে।এই পুরো প্রক্রিয়াতে ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার অর্থাৎ কোড লিখা ও সমাধান করা হয় বলে বিটকয়েনকে ক্রিপ্টোকারেন্সি বলা হয়।


কেন এই বিটকয়েন ?কিভাবে এটা কাজ করে?

বিটকয়েন এর মূল ধারণা আসে ২০০৮ সালে ইন্টারনেটের একটি ফোরামে যেই প্রোফাইলের নাম ছিল সাতোশি নাকামোতো । তিনি একটি ডিজিটাল কারেন্সি তৈরির কথাআ বলেন যেখানে কোন সেন্ট্রাল অথোরিটি থাকবে না। অর্থাৎ বুঝাই যাচ্ছে বিটকয়েনের মূল উদ্দেশ্য হলো ট্রান্সেকশানকে ডিসেন্ট্রালাইজড করা। আমরা যখন কোন লেনদেন করতে যাই তখন আমাদের ব্যাংক বা সরকারের সাথে যুক্ত থাকতে হয়। সহজভাবে বলতে গেলে আমরা বিদেশে যদি টাকা পাঠাতে চাই সেক্ষেত্রে কোন না কোনভাবে আমরা সরকার বা সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাথে সংযুক্ত। তাই সাতোশি এমন এক আইডিয়া দেন যেখানে সেন্টাল অথোরিটি বলতে কেউ থাকবে না। এই আইডিয়া থেকেই পাবলিক লেজারের ধারণা আসে। এই লেজারে সব তথ্য থাকবে যাকে ব্লক চেইন বলা হয়।

সাতোশি বলেন এই পাবলিক লেজারের সাথে যে কেউ যুক্ত হতে পারবেন। যুক্ত হতে হলে তার সিপিইউ (CPU) পাওয়ারকে ব্যবহার করতে হবে। এই সিপিইউ তে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে মাইনিং করবেন।তারাই এই ব্লক চেইন নেটওয়ার্ক দেখাশোনা করবেন এবং ফলস্বরুপ তারা নতুন কারেন্সি জেনারেট করার সুযোগ পাবেন।


বিটকয়েন মাইনিং কে যতটা সহজ মনে হচ্ছে আসলে ততটা সহজ নয়! সিপিইউ তে যেই সফটওয়্যার থাকবে সেটা অনেক জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে লেজারকে একটি  এলগরিদম প্রদান করে।অর্থাৎ লেজার এই মাইনার দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে।বিটকয়েন মাইনিং এর জন্য অনেক শক্তিশালী সিপিইউ ব্যবহার করা হয়,কেউ কেউ তো আবার সম্পূর্ণ হাব ভাড়া করে রেখে দেন।


ক্ষতিকারক ?

বিটকয়েনের মূল যেই ধারণা অর্থাৎ কেন্দ্রীয় কোন অথোরিটি না থাকাই এর ক্ষতির কারণ হিসেবে দেখা দিতে পারে বা দিচ্ছে। মানি লন্ডারিং, অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র কেনা বেচা আজকাল বিটকয়েনের আশীর্বাদে সহজ হয়ে গেছে। কিন্ত সব দিক বিবেচনা করলে একে খুব ক্ষতিকারক বলা যায় না। কারণ এরজন্য খুব সহজেই লেনদেন করা যাচ্ছে।কেননা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্যাংকগুলো মানুষের জমানো টাকা গুলো ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে না। এতে করে অনেক ক্ষুদ্র পুঁজির জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি এলোন মাস্কের কোম্পানি "টেসলা" বিটকয়েনের উপর দেড় মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে এই ডিজিটাল কারেন্সির একটি ভবিষ্যৎ বার্তা দিয়ে দিয়েছেন।এছাড়াও জাপানে বিটকয়েন বৈধতা পেয়েছে অনেক আগেই।আমেরিকার অনেক জায়গায় বিটকয়েন গ্রহণ করা হচ্ছে।অর্থাৎ বিটকয়েন যে ভবিষ্যতের মুদ্রা হতে চলেছে সেই ধারণা আমরা করতেই পারি। আমাদের বাংলাদেশে যদিও এখনো এই ধরণের অনলাইন কারেন্সি আদান প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ই রয়ে গেছে।

তো আপনি কি মনে করেন, বিটকয়েন আশীর্বাদ না অভিশাপ?

Post a Comment

0 Comments