১০ ই জুলাই , ১৯৪০ সালের এই দিনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আকাশ যুদ্ধ বা বিমান যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ইংল্যান্ডের আকাশে যা Battle of Britain নামে পরিচিত । ১৯৪০ সালে ২৫ই জুন ব্যাটেল অফ ফ্রান্সে নাৎসিরা জয়ী হওয়ার ১৫ দিন পর জার্মান লুফ্টওয়াফা ( এয়ারফোর্স ) ইংল্যান্ডে বিশাল বড় বোম্বিং ক্যাম্পেইন শুরু করে যা লন্ডন শহরকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে । ব্যাটেল অফ ব্রিটেইন শুরু হয়েছিলো ১০ই জুলাই,১৯৪০ সালে যা শেষ হয়েছিলো ৩১ ই অক্টোবর ১৯৪০ সালে ।
নাৎসি বাহিনী ফ্রান্স দখলের পর হিটলার তার মিলিটারী হাই-কমান্ডকে নির্দেশ দেয় ব্রিটিশ রাজের মেইন-ল্যান্ড ইংল্যান্ডে আক্রমণ করার জন্য । কিন্তু সি-বোর্ন বা এম্ফিবিয়াস এটাকে প্রথম সমস্যা হচ্ছে ইংলিশ চ্যানেলে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি । কারন তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম সেরা নৌ-শক্তি । হিটলার ও তার বাহিনী খুব ভালভাবে জানতো জার্মান নৌ-বাহিনী কোনভাবেই ব্রিটিশ নৌ-বাহিনীর সমকক্ষ নয় । কিন্তু হিটলারের তখন পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ও শক্তিশালী বিমান বাহিনী ছিলো যা লুফ্টওয়াফা নামে পরিচিত । হিটলার সিদ্ধান্ত নিলো ইংল্যান্ডের শহরগুলাতে , গুরুত্বপূর্ন কলকারখানা আক্রমন করে ইংলিশদের মনোবল ভেঙে দিবে এবং তখন জনগনের চাপে হয়তো ব্রিটিশ গভমেন্ট জার্মানদের সাথে শান্তি চুক্তি করতে বাধ্য হবে । এই ভাবনা থেকেই হিটলার ইংল্যান্ড আক্রমণের নির্দেশ দেয় জার্মান লুফ্টওয়াফাকে ।
জার্মান লুফ্টওয়াফা সমুদ্রের জোয়ারের মত বোম্বার ও ফাইটার বিমান পাঠাতে শুরু করলো ইংল্যান্ডের উদ্ধেশ্যে কিন্তু ব্রিটিশদের একটা এডভান্টেজ ছিলো যা হচ্ছে “ অত্যাধুনিক রাডার প্রযুক্তি “ । তাই জার্মানরা যত বড় বিমান বহরই পাঠাছে তা আগেই জেনে যেত ব্রিটিশরা এবং সেই অনুযায়ী ফাইটার পাঠানো হতো হিটালারের লুফ্টওয়াফাকে থামানোর জন্য । ব্রিটিশদের ছিলো “ হকার হারিকেন “ ও ” সুপার মেরিন স্প্রিটফায়ার ” এর মত আধুনিক ফাইটার বিমান আর অন্যদিকে জার্মানদের ছিলো অত্যাধুনিক বিএফএফ-১০৯ ফাইটার, স্টুকার মত ডাইভ বোম্বার ও হেইনকেল হি-১১১ এর মত আধুনিক বোম্বার । এই যুদ্ধে জার্মানদের প্রায় ৩হাজারের মত ( উইকিপিডিয়াতে ২ হাজারের মত ) বিমান ধ্বংস হয় আর অন্যদিকে ব্রিটিশরা ১ হাজার ৫শো এর মত বিমান হারায় । এই যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি আলো ছড়ায় ব্রিটিশ ফাইটার “ সুপার মেরিন স্প্রিটফায়ার “ যা ইংলিশদের ইংল্যান্ডকে বাচিয়ে ছিলো । এই যুদ্ধের সময় বড় ধরনের কোন আমেরিকান , সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য ছিলো না শুধু ইংল্যান্ড ছিলো । এই যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলো ইংল্যান্ড এবং এটাই ছিলো হিটলারের প্রথম বড় পরাজয়ের স্বাদ । এই পরাজয়ের পরই অপারেশন সি লায়নের মত অপারেশন বাতিল হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে যা রূপ নেয় ব্যাটেল অফ বারবারোজাতে ।
0 Comments